Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সার ব্যবহার আধুনিকায়ন

সার ব্যবহার আধুনিকায়ন
ড. মো. সদরুল আমিন
বর্তমানে দেশে সার ব্যবহারে নানারূপ সমস্যার কারণে সারভেদে মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, কিন্তু উৎপাদিত পণ্যের মূল্য সেভাবে বাড়ছে না। তাই বর্তমান কৃষি প্রযুক্তি ও উপকরণ বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যবহার করে ফসল চাষ ব্যয় সমন্বয় করা সম্ভব। সার ব্যবহার লাভজনক ও নিরাপদ করতে হলে অবশ্যই এর স্মার্ট আধুনিকায়ন করতে হবে। এজন্য কমপক্ষে ৩টি কাজ করতে হবে। যেমন-(১) সার ব্যবহারে মাটির পুষ্টি উপাদান পরীক্ষা ও অপুষ্টি লক্ষণ বিবেচনায় নিতে হবে। (২) সংগায়িত সার প্রযুক্তি সুপারিশ উদ্ভাবন ও সার আইন প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন এবং (৩) সারকে কল্যাণধর্মী উপকরণ বিবেচনা করে আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে।
দেশে  উপরে বর্ণিত ৩টি করণীয় সম্পাদন করে সার বাবদ খরচ ২০% কমানো সম্ভব এবং ফসলের উৎপাদন ২০% বাড়ানো সম্ভব। নয়তো সার বাবদ খরচ বছরে ২০% পর্যন্ত বেড়ে কৃষিকে অকার্যকর করে দিতে পারে।
উদ্ভিদের বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফুল, ফল এবং বীজ উৎপাদনের জন্য অত্যাবশ্যক খাদ্যোপাদান প্রয়োজন। এর সংখ্যা ১৮টি। কোন উপাদানের অভাব হলে উদ্ভিদ মারা যাবে এবং ঘাটতি হলে উদ্ভিদের দেহ ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটবে, যা নির্দিষ্ট লক্ষণের মাধ্যমে প্রকাশ পাবে। পরিশোষণের পরিমাণের ভিত্তিতে এসব অত্যাবশ্যক খাদ্যোপাদান দুই প্রকার। যথা :
১. মুখ্য খাদ্যোপাদান- বেশি পরিমাণে প্রয়োজন। মুখ্য উপাদান ৯টি (কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশ, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম ও সালফার)।
২. গৌণ খাদ্যোপাদান- কম পরিমাণে প্রয়োজন। গৌণ উপাদান ৭টি (জিংক, বোরন, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, মলিবডেনাম কোবাল্ট স্ট্রনসিয়াম ও ক্লোরিন)।
সার ব্যবহার লাভজনক করতে অবশ্যই গাছ অপুষ্টি লক্ষণ দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বালাই লক্ষণের সাথে মিল-অমিল যাচাই করতে হবে । এজন্য পর্যাপ্ত বাস্তব অভিজ্ঞতা ও স্মার্ট জ্ঞান প্রয়োজন।
পুষ্টি উপাদানের অভাবজনিত বৈজ্ঞানিক সুনির্দিষ্ট লক্ষণ (একটি উপাদান একটি লক্ষণ)
নাইট্রোজেন : গাছের গোড়ার দিকে বয়স্ক পাতা হলুদ হয়ে যায়।
ফসফরাস : গাছের রং গাঢ় সবুজ, কিন্তু বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়।
পটাশিয়াম : গাছের গোড়ার পাতায় বাদামি দাগ দেখা যায়।
সালফার :  সালফারের অভাবে গাছের নতুন গজানো পাতা হলুদ হয়।
ম্যাগনেসিয়াম : বয়স্ক পাতার আন্তঃশিরা হলদে-সাদা ছিটপড়া দাগ দেখা যায়। যদিও প্রধান শিরাগুলো সবুজ থাকে।
ক্যালসিয়াম : নতুন গজানো পাতার শীর্ষদেশ সাদা হয়ে কুঁকড়ে যায়।
জিংক :  পাতার গোড়া সাদা বাদামি, অসম বৃদ্ধি ।
বোরন : ফল আঁকাবাঁকা হয়।
মলিবডেনাম : পাতা চিকন ও পেঁচিয়ে যায়।
ম্যাঙ্গানিজ : কচি পাতা সরু ও খাটো হয়।
আয়রন : নতুন পাতায় প্রথমে সাদাটে ক্লোরোটিক দাগ দেখা যায়।
কপার : কচি পাতা সূচের আকার ধারণ করে।
সার প্রযুক্তি
বর্ধনশীল জনসংখ্যার বসতবাড়ি এবং রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ, শিল্প কারখানা ইত্যাদি নির্মাণ ও জমির বহুবিধ ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে দেশে কৃষি জমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। উচ্চফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের খাদ্য চাহিদা বেশি হওয়ায় এখন জমি থেকে অনেক বেশি পরিমাণে খাদ্যোপাদান অপসারিত হচ্ছে। ফলে জমির জৈব পদার্থ ও উর্বরতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। আগে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপিসহ ১০-১২টি সার দিয়ে ফসল চাষ করা যেত। এখন সেখানে এ সার ছাড়াও জিপসাম, দস্তা, বোরনসহ মোট ৫০-৬০টি সার ব্যবহার করতে হচ্ছে।
তাই মাটি স্বাস্থ্য ঠিক রাখা এবং ভবিষ্যৎ টেকসই ফসল উৎপাদন ব্যবস্থা বজায় রাখার স্বার্থে মাটি ও সার তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মাটির উর্বরতা ঠিক রাখা এবং ভালো ফসল উৎপাদনের জন্য জৈবসার ও ফসলের চাহিদা অনুযায়ী সুষম সারের ব্যবহার জরুরি।
সারের শ্রেণি বিভাগ
সারকে বিভিন্নভাবে শ্রেণি বিভাগ করা হয়ে থাকে, যেমন- সারের উৎস, সারে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান এবং সারের আকৃতি প্রকৃতি ও গঠন অনুসারে। উৎস অনুসারে সারকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন-রাসায়নিক উৎস থেকে প্রস্তুতকৃত সার, যেমন-ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি, এমওপি। জৈব উৎস থেকে প্রস্তুতকৃত সার অর্থাৎ জৈব দ্রব্য পচিয়ে যে সার প্রস্তুত করা হয়। ফসলের জন্য উপকারী অণুজীব সম্বলিত সার। বাংলাদেশে সুক্ষদানা, তরল ও স্মার্ট ন্যানো সাার ব্যবহার করা দরকার।
পুষ্টি অনুসারে মুখ্য পুষ্টি উপাদান বিশিষ্ট সার, যেমন- ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি, এমওপি, জিপসাম। গৌণ পুষ্টি উপাদান বিশিষ্ট সার, যেমন- জিংক সালফেট (মনো/হেপ্টাহাইড্রোট), বরিক এসিড, সলুবোর।
সারের আকৃতি প্রকৃতি ও গঠন অনুসারে, যেমন- একক উপাদান সার (সরল সার), যেমন- ইউরিয়া (নাইট্রোজেন), টিএসপি (ফসফরাস), এমওপি (পটাশ)। রাসায়নিকভাবে সংযুক্ত একাধিক পুষ্টি উপাদন সার (যৌগিক সার), যেমন- ডিএমপি (নাইট্রোজেন ও ফসফেট), এসওপি (ফসফরাস ও সালফার)। একাধিক সার মিশ্রণের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত সার (মিশ্র সার), যেমন- এনপিকেএস (ঘচকঝ) মিশ্র সার।
সার প্রয়োগের জরুরি বিষয় : সার প্রয়োগের পর তা মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে; জমিতে ছিপছিপে পানি থাকা অবস্থায় ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিলে এ সারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়; জৈবসার ফসল বপন/রোপণের কমপক্ষে ৭ দিন পূর্বে জমিতে প্রয়োগ করে মাটি সাথে মিশিয়ে দিতে হবে; ফসলের বর্ধনশীল অবস্থায় গৌণ পুষ্টির অভাব দেখা দিলে স্প্রে করা উত্তম।
সঠিকভাবে ব্যবহার করা না হলে প্রয়োগকৃত ইউরিয়া সারের  ৬০-৭০% ভাগ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, উফশী ধান চাষে ইউরিয়া তিন বারে প্রয়োগ করতে হবে। জমি শেষ চাষের পূর্বে বা ধানের চারা মাটিতে লেগে যাওয়ার পরপরই ১ম বার, বর্ধনশীল পর্যায়ে ২য় বার এবং ডিগ পাতা বের হওয়ার ১৫-২০ দিন পূর্বে ৩য় বার ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের সময় ক্ষেতে ছিপছিপে পানি থাকতে হবে এবং সার প্রয়োগের পর পরই তা ভালোভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এক্ষত্রে তরল বা ন্যানো আকারে একটি স্প্রে করলে ব্যয় কমে যাবে।
আলু ফসলে অর্ধেক ইউরিয়া ও এমওপি ও অন্যান্য সার শেষ চাষের পূর্বে দিতে হবে। অর্ধেক ইউরিয়া ও এমওপি সার আলু লাগানোর ৩০-৩৫ দিন পর ভ্যালি তৈরির সময় পার্শ্ব প্রয়োগ করতে হবে। আলু ফসলে মোট সারের ১০-২০ % ইউরিয়া কমানোর সুযোগ রয়েছে।
মাঠ পর্যায়ে ভেজাল সার সনাক্তকরণ
মিশ্র সার, জৈবসার, সালফেট, বোরন সার ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সারে বেশি ভেজাল পাওয়া যায়। মাঠ পর্যায়ে ভেজাল সার শনাক্তকরণের আধুনিক পদ্ধতি-
ইউরিয়া : ১ চা চামচ (প্রায় ১ গ্রাম) ইউরিয়া সার ২ চামচ পরিমাণ পানিতে গলে সচ্ছ ঠা-া দ্রবণ তৈরি করবে।    
টিএসপি : টিএসপি সারের দানা বেশ শক্ত। তাই টিএসপি দানা দুই বুড়ো আঙুলের নখের মাঝে রেখে চাপ দিয়ে তা ভাঙা যায় না। কিন্তু ভেজাল টিএসপি অপেক্ষাকৃত নরম। ভাঙা দানার ভেতরের অংশ বিভিন্ন রঙের হতে পারে।
ডিএপি সার : ২ চা চামচ ডিএপি সার একটি কাগজের উপর খোলা অবস্থায় ১-২ ঘণ্টা রেখে দিলে ভিজে না উঠে তবে নমুনাটি ভেজাল ডিএপি। এক চা চামচ ডিএপি সার আধাগ্লাস পানিতে মিশালে পানিতে গলে যাবে।
এমওপি : লালচে স্ফটিকাকৃতির। ঝাঁঝালো গন্ধ নেই। বর্ষাকালে এমওপি আর্দ্রতা শোষণ করে ভিজে উঠে। এমওপি সার গলে পরিষ্কার দ্রবণ তৈরি করে। এমওপি সারের রং হাতে লাগবে না।
এনপিকেএস  মিশ্র সার : বোরো ধানের জন্য অনুমোদিত ৮ : ২০ : ১৪ : ৫ এবং গমের জন্য অনুমোদিত  ১২ : ১৫ : ২০ : ৬.৫ গ্রেডের মিশ্রসার দুটিই দেশে বেশি প্রচলিত। এ সারের ভেজাল হিসেবে মাটি, ডলোমাইট ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ভেজাল সারের দানা আঙুল দিয়ে চাপ দিলে গুঁড়া হয়ে যাবে। দানার ভেতর ও বাইরের প্রলেপের রং আলাদা হবে।
জিপসাম : চুনের গুঁড়া ও মটির গুঁড়া মিশিয়ে জিপসাম সারে ভেজাল দেয়া হয়। ১ চামচ ভেজাল জিপসাম সারে ১০ ফোটা  হাইড্রোক্লোরিক এসিড মেশালে বুদ বুদ দেখা দিবে ।
জিংক সালফেট (মনোহাইড্রেট) : আধা গ্লাস পানিতে ১-২ চা চামচ জিংক সালফেট (মনোহাইড্রেট) দ্রবীভূত করলে দ্রবণ ঘোলাটে হবে। দ্রবণে পেজা তুলার মতো বস্তু ভাসতে থাকবে। কিন্তু হেপ্টাহাইড্রেট গলে যাবে।
লিবরেল জিংক : চিলেটেড জিংক স্ফটিক সাদা বা হলদেটে পাউডারের ন্যায় এবং ওজনে হালকা। এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ চিলেটেড জিংক মেশালে গলে যাবে।  
সলুবর বোরন সার : সলুবর সাদা, হালকা, পাউডার ২০% বোরন।  

লেখক : প্রফেসর (অব:) হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর। মোবাইল : ০১৯৮৮৮০২২৫৩; ই-মেইল :sadrulamin47@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon